Monday, September 19, 2011

পেটে ঢুকছে মার্বেল, দাম বাড়ছে ইলিশের




বরিশাল, সেপ্টেম্বর ১৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- এক কেজির নিচে ইলিশের দাম হয় পাঁচ থেকে ছয়শ টাকা। কিন্তু যদি এক কেজির বেশি হয় ওজন, তাহলে দাম হাজার ছাড়িয়ে যায়। আর এ সুযোগই নিচ্ছে একদল অসাধু মাছ ব্যবসায়ী।

ইলিশের ওজন বাড়াতে মাছের পেটে মার্বেল-পাথর-লোহা ভরে দিচ্ছে এ ব্যবসায়ীরা, যা মঙ্গলবার বরিশালের ইলিশের প্রধান মোকাম পোর্ট রোডের বিভিন্ন আড়তে ক্রেতাদের নজরে পড়ে। এ নিয়ে শোরগোল এমনকি সভায় হয়।

তবে জেলে বা আড়তদার কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা এখনো নিশ্চিত করতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রলীগ নেতা মাসরেফুল ইসলাম সৈকত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সকালে মোকাম থেকে সাড়ে এগারোশ' টাকা কেজি দরে ছয়টি ইলিশ কেনেন তিনি।

নতুন বাজারে গিয়ে মাছ কাটলে দুটি মাছের পেট থেকে ২০টি করে মোট ৪০টি মার্বেল বের হয়। এরপর অন্য মাছ না কেটে আড়তে ফেরত দিয়ে আসেন মাসরেফুল।

পরে অনুসন্ধান চালিয়ে ইলিশ মোকামের 'সায়েম এন্টারপ্রাইজ' এ কয়েকটি মাছের পেটে মার্বেল ও পাথর পাওয়া গেছে। একইভাবে মার্বেল পাওয়া গেছে 'শাহীন ট্রেডার্স' মৎস্য আড়তেও।

এর আগেও কিছু মাছের পেটে মার্বেল কিংবা পাথর পাওয়ার কথা স্বীকার করেন বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল।

তিনি বলেন, এ নিয়ে সভা ডাকা হয়েছে। অচিরেই জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাছ ব্যবসায়ী মো. বাবর আলী বলেন, ভরা মৌসুমেও তেমন ইলিশের দেখা নেই। এক কেজির নিচে ইলিশ মাছের দাম কেজি প্রতি ৫০০-৬০০ টাকা এবং এক কেজির ওপরে উঠলে ১১০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হয়।

"এই সুযোগে একদল অসাধু ব্যবসায়ী কম ওজনের মাছের পেটে মার্বেল, পাথর ও বরফ ঢুকিয়ে বেশি দামে আড়তে বিক্রি করছে। কিন্তু যেহেতু মাছ ৫/৬ বার হাত বদল করে মোকামে আসে তাই নিশ্চিত করে ধরা যাচ্ছে না করা এই অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত", বলেন তিনি।

মো. হানিফ সিকদার নামে এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, এর আগে জালের কাঠি (লোহা) পাওয়া গিয়েছিলো ইলিশের পেটে।

আড়তে যারা মাছ দেয় তারাই এক কাজ করছে বলে দাবি করেন তিনি।

শাহীন ট্রেডার্সের আবদুর রব ছট্টু মিয়া ও মো. স্বপন বলেন, সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন এলাকার পাইকাররা এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

মোকামের ব্যবসায়ী মো. মোর্শেদ খান বলেন, এখানকার ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানি হয়। দেশের বাইরে এরকম একটি ঘটনা ধরা পড়লে এর প্রভাব পড়বে সরাসরি রপ্তানিতে।

"দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। এতে আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যাবে", বলেন তিনি।

এ বিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. শাহিদুজ্জামান বলেন, "আমরা শুনেছি ইলিশ মাছের পেটে মার্বেল ঢুকিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

No comments:

Post a Comment