Monday, September 19, 2011

"অবশেষে.....উইন্ডোজ ৮"- (Windows 8)___!!!!

টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফটের তৈরি অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ৮ কে নিয়ে প্রযুক্তি বিশ্বে অনেকদিন ধরেই আলোচনা হয়েছে। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মাইক্রোসফট কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এ অপারেটিং সিস্টেমের ওপর থেকে পর্দা সরিয়ে নিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার বিল্ড ডেভেলপারস কনফারেন্সে উইন্ডোজ ৮ বাজারে আনার কথা জানিয়েছেন মাইক্রোসফট উইন্ডোজ বিভাগের প্রেসিডেন্ট 'স্টিভেন সিনোফস্কি'।
কম্পিউটার, ট্যাবলেট এবং ল্যাপটপ প্ল্যাটফর্মের জন্য ব্যবহৃত হবে এ সংস্করণটি। এ সংস্করণটিতে নতুন কি কি থাকছে তা নিয়েই এই পোস্ট-
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ বিভাগের প্রেসিডেন্ট 'স্টিভেন সিনোফস্কি' জানিয়েছেন, ‘আমরা উইন্ডোজকে নতুন করে সাজিয়েছি। উইন্ডোজ ৯৫ সংস্করণের পর অপারেটিং সিস্টেম আপগ্রেডের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উইন্ডোজ ৮ কেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।'
এবারের ‘বিল্ড’ নামে ডেভেলপার্স কনফারেন্সে টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৮ এর বিভিন্ন ফিচার বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্টিভেন সিনোফস্কি বলেছেন, ‘অন্যান্য সংস্করণে মাল্টিটাস্কিং সুবিধার কথা বলা হলেও উইন্ডোজ ৮ এ পাওয়া যাবে আসল মাল্টিটাস্কিং-এর মজা। শুধু ট্যাবলেট নয়, এ অপারেটিং সিস্টেম ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপের জন্যও। উইন্ডোজ ৮ এ ব্যবহার করা হয়েছে হাইপার- ভি ভার্চুয়ালাইজেশন; যার ফলে উইন্ডোজ ৭ বা তার আগের সংস্করণের জন্য তৈরি অ্যাপ্লিকেশনগুলোও এখানে কাজ করবে। এতে থাকবে একটি অ্যাপ্লিকেশন স্টোর, যেখান থেকে ব্যবহারকারীরা নানান অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। ক্লাউড কম্পিউটিংভিত্তিক এ অপারেটিং সিস্টেমে ডেভেলপারদের অ্যাপ্লিকেশন তৈরির জন্য নানান টুলস দিয়ে দেয়া হয়েছে যা ইতোমধ্যেই ডেভেলপারদের কাছে প্রশংসা পেয়েছে। নতুন অনেকগুলো ফিচার রয়েছে উইন্ডোজ ৮-এ। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ইউজার ইন্টারফেস, টাচ, স্কাইড্রাইভ, অ্যাপস্টোর, এআরএম প্রসেসর, টাস্ক ম্যানেজারসহ বেশ কিছু নতুন ফিচার।
টাচ কীবোর্ড:
উইন্ডোজ ৮ এ থাকছে দুটি টাচ কীবোর্ড। একটি বড়ো বাটনযুক্ত ফুল-সাইজ টাচ কীবোর্ড এবং আরেকটি থা¤^ কীবোর্ড। টাইপের গতি বাড়াতে এবং নিঁখুত করতে কীবোর্ড দুটিতেই একাধিক ফিচার রয়েছে। কোনো ওয়ার্ড টাইপ করতে শুরু করলে কীবোর্ড সেই শব্দটি অনুমান করে দেখাবে এবং শব্দটি বেছে নেয়া যাবে। সাধারণ মাউস এবং কীবোর্ড উইন্ডোজ সমর্থন করবে। কোন ভাষার কীবোর্ড ব্যবহার করা হবে সেটি ব্যবহারকারী পছন্দ করে নেবার সুযোগ পাবে। কোনো নির্দিষ্ট প্রোগ্রামের পরিবর্তে ইনপুট এবং ভাষা নির্বাচন করলে উইন্ডোজ সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুরো কম্পিউটারের জন্য মেনে চলবে।
স্কাই ড্রাইভ:
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৮ সংস্করণে যোগ হচ্ছে ক্লাউড সুবিধা। ক্লাউড সুবিধার এ পদ্ধতিটির নাম ‘স্কাই ড্রাইভ’।
এ ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যেকোনো ব্রাউজার বা মেট্রো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে কোনো ফাইল, ছবি, ডকুমেন্টে অ্যাকসেস পাওয়া যাবে।
অ্যাপ স্টোর:
অ্যাপ স্টোর প্রসঙ্গে স্টিভেন সিনোফস্কি জানিয়েছেন, ‘নতুন অপারেটিং সিস্টেমটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে অ্যাপ্লিকেশনের ওপর। উইন্ডোজ ৮ এ প্রথমবারের মতো যোগ হচ্ছে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের মতোই একটি অ্যাপ স্টোর। উইন্ডোজ ৭ এ যেখানে র‌্যাম লাগে ৪০৪ মেগাবাইট সেখানে উইন্ডোজ ৮ এ লাগবে মাত্রই ২৮১ মেগাবাইট। মুল অপারেটিং সিস্টেমেই আসল ক্ষমতা রয়েছে তাই আলাদা লেয়ার বসানোর প্রয়োজন পড়েনি। ফলে হার্ডওয়্যারের জন্য এটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারি খরচ করে। স্টার্ট-আপ টাইমও কমে এসে মাত্র ৮ সেকেন্ডে ঠেকবে।
এআরএম প্রসেসর সমর্থন করে:
উইন্ডোজের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো উইন্ডোজ ৮ এরআরএম-এর তৈরি প্রসেসর সমর্থন করবে। এ ছাড়াও এএমডি এবং ইনটেলের চিপও এ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য সমর্থনযোগ্য থাকছেই। এআরএম প্রসেসর সাধারণত ট্যাবলেট এবং স্মার্টফোনে ব্যবহৃত হয়। এআরএম প্রসেসর সমর্থন করতে মাইক্রোসফটকে এনভিডিয়া, কোয়ালকোম এবং টেক্সাস ইনস্ট্রমেন্টস নামের হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারী জায়ান্টদের সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।
দ্রুতগতির বুটআপ:
মাত্রই আট সেকেন্ডের বুটআপ সময় লাগবে বলেই মাইক্রোসফট জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে সিনোফক্সি তার ব্লগে বলেছেন, ‘বুটআপের জন্য সারাদিন বসে থাকার প্রয়োজন হবে না। আমরা যখনই বুট করতে যাই, আমদের চাওয়া থাকে দ্রুতগতির বুট আপ। উইন্ডোজ ৮ এ সেটিই থাকছে।’
মেট্রো ইন্টারফেস:
উইন্ডোজ ৮ সংস্করণে থাকছে দুটি ইন্টারফেস। একটি সাধারণ কম্পিউটার ইন্টারফেস এবং আরেকটি হচ্ছে ‘মেট্রো’ নামের ট্যাবলেট কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য আলাদা ইন্টারফেস। মেট্রো ইন্টারফেস অনেকটাই উইন্ডোজ ৭ এ থাকা টাইলসভিত্তিক ইন্টারফেসের মতো। এ ইন্টারফেস ট্যাবলেট কম্পিউটারের জন্য মানানসই। মেট্রো ইন্টারফেস টাচবান্ধব ইন্টারফেস হবার ফলে নেভিগেশন আরো সহজ হবে। এতে রয়েছে পার্সোনালাইজড লেআউট, যাতে স্বচ্ছ টপোগ্রাফি এবং অ্যানিমেশন ব্যবহার করা হয়েছে। দ্রুত চালু হবার জন্য সব ধরনের ইউজার অ্যাপ্লিকেশন স্টার্ট আপ স্ক্রিনের সামনেই দেখাবে মেট্রো ইন্টারফেস।
নিরাপত্তা:
অন্যান্য সংস্করণের চেয়ে উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেমের নিরাপত্তা আরো গভীরভাবে পর্যালোচনা করছে মাইক্রোসফট। ভাইরাস বা বাগ থেকে ফাইল বা সেটিংস রক্ষায় উইন্ডোজ ৮ কার্যকর হবে বলেই সিনোফস্কির মতো।
সুতরাং, সব কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে এগিয়ে আসছে 'উইন্ডোস ৮'।
তবে আগ্রহীদের আর একটু সময় ধৈর্য ধারন করতে হবে কারন, 'স্টিভেন সিনোফক্সি' জানিয়েছেন তারা এর মান নিয়ে আরও একটু চিন্তা করবেন তবে ২০১২-এর প্রথম বা মাঝামাঝি সময় এটি অবশ্যই বাজারে আসবে।

No comments:

Post a Comment