
জন্মগত ভাবে মানুষ সঙগ প্রিয় । বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব, ও আত্বীয়-স্বজন সকলে নিয়েই মানুষের সামাজিক জীবন । আর এই সামাজিক জীবন কে পরিপূর্ণ ও সার্থক করতে প্রয়োজন বিবাহ । বিবাহ একটি পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও আইনগত বৈধ বন্ধন । কিন্তু বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী দেখে, শুনে ও শিক্ষা নিয়ে আজ অনেকেই বিয়ে করতে ভয় পায় । অনেকে বলছে-পরাধীনতা, একই বেড়াজালে জীবনযাপন, এক ঘেয়েমিতা । আমি এসবের সাথে মোটেও একমত নই । আমি বলি, বিয়ে মানে সু-সৃঙখল জীবনযাপনের মাধ্যমে নতুন কিছু সৃষ্টি, স্বপ্ন পূরন । বিয়ে মানে পারস্পারিক ভালোবাসা, দায়িত্ব, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, সম্মান, ও মূল্যায়ন। তবুও মানুষের মন বড় অস্থির । আমাদের কাছে মোবাইল আসার পর সেটা বুঝতে পারি একজন ছেড়ে দেই আরেক জন কে খুজে নিতে বেশি দিন সময় লাগছে না। বেড়েছে মিথ্যা বলার প্রবনতা । একজন অনেকের সাথে একসাথে সম্পর্ক বজায় রাখছে । স্বামী-স্ত্রী মাঝে মোবাইল সন্দেহ বাড়ছে কলহ । ভাংছে সংসার । অনেকের মতে; কেউ বলছে বিবাহ হল দিল্লিকা লাড্ডু, খাইলেও পস্তাই না খাইলেও পস্তাই। আবার কার মতে, পূরুষ মানুষের দুই রুপ; জীবিত আর মৃত। এগুলো ভয়, অশান্ত ও অসুখী জীবনের ছাপ ছাড়া কিছু না। তাই বলে কি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে না? মানসিক ও দৈহিক চাহিদা উপেক্ষা করা কঠিন । তবে বিয়েতে ভয় কিসের ?
বিয়ের পূর্বে করণীয়ঃ
মিল-অমিলঃ আমাদের সামাজিক জীবনে আজ মানুষ বড়ই অস্থির জীবনযাপন করছে । মানুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে কিন্তু বিয়ে পরবর্তী জীবনে পারস্পারিক বোঝাপড়া ও মিলের অভাবে চলছে টানা পোড়া । আগে নিজেকে ভালভাবে জানতে হবে। অতঃপর বিবাহের পূর্বে দুজনের উচিত পারস্পারিক মানসিকতা, বুঝাপড়া, চাওয়া-পাওয়া, স্বপ্ন, আর্থিক আবস্থান, সৌন্দর্য্য, ইমান-আমল, জীবন দর্শন ও মূল্যবোধের মিল-অমিল দেখে নেওয়া । দুজনের স্বপ্ন ও জীবন গন্তব্য যদি এক হয়ে সেক্ষেত্রে জীবন চলা অতি সহজ হয়। তবে আমার মনে হয় বিয়ে পরবর্তী জীবনে আর গরমিলের জন্য পারিবারিক জীবনে কোন অশান্তির সৃষ্টি হবে না ।
বিয়ে পরবর্তী জীবনঃ
পরিবর্তনশীলতাঃ
জীবনের একঘেয়েমিতা দূর করতে বিয়ে পরবর্তী জীবনে দুজনেরই উচিত নতুনত্ব খুজে নেওয়া, সব সময় নতুনভাবে পরস্পরকে উপস্থাপন করা যেন বিয়ে পরবর্তী জীবনে এক ঘেয়েমিতা না আসে ।
ভালোবাসা, দায়িত্ব, বিশ্বাস ও মূল্যায়নঃ
বিয়ে মানুষ কে দায়িত্বশীলতা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়। বিয়ে বজায় থাকে বিশ্বাসের উপর । অনেক বড় দায়িত্বও । তাই লক্ষ্য রাখা উচিত দুজনের মধ্যে যেন বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সম্মান ও মূল্যায়নের কোন ঘাটতি না থাকে । সন্দেহ করা বা একজন আরেক জন কে ছোট করা বা ছোট হয়ে যায় এমন কাজ করা উচিত নয় ।
যত্নশীলতাঃ
দুজন দুজনের ভালোবাসার প্রতি যত্নশীল ও শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত । সকল কাজে সহযোগীতা করা উচিত। শত ব্যস্ততার মাঝেও ভালোবাসার মানুষকে সময় দেওয়া । ভালোবাসার অনেক বেশি যত্ন নেওয়া উচিত যেমন-সকালে দুজনে একসাথে হাটতে বের হওয়া, কোথাও ঘুরতে যাওয়া, বিশেষ বিশেষ দিনে উপহার দেওয়া ইত্যাদি ।
ধর্ম বিশ্বাস ও আমলঃ
মানুষের মন বড়ই অস্থির । যেখানে শান্তি ও সুখ মিলে সেখানে ছুটে চলে যায় । একমাত্র ধর্ম বিশ্বাস ও আমল মানসিক অস্থিরতা দূর করতে পারে এবং নানাবিধ সমাস্যা থেকে দূরে থাকা যায়, জীবন সুন্দর ও সামাজিক হয় । সেজন্য ধর্ম বিশ্বাস ও আমল করা উচিত যা পরবর্তী জীবনে সুখ, শান্তি ও সার্থক জীবন দান করতে পারে ।
আমি অবিবাহিত । বিবাহ বন্ধনের প্রতি আমার সবসময় সম্মান ও শ্রদ্ধা ছিল, এবং আছে । বিয়ে বলতে সু-সৃঙখল জীবনযাপনের মাধ্যমে নতুন কিছু সৃষ্টি, স্বপ্ন পূরন,পারস্পারিক ভালোবাসা, দায়িত্ব, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, সম্মান, ও মূল্যায়ন। এটাই বুঝি । আর আপনি কি মনে করেন ?
No comments:
Post a Comment